ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণ করতে তিনটি সংস্থা যথাক্রমে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি, গ্রিন সেভারস ও কমিউনিটি টাউন ফেডারেশনের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে ডিএনসিসি। গত বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩ ইং তারিখে ডিএনসিসির প্রধান কার্যালয় নগরভবনের একটি সম্মেলন কক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
উক্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খাজা শাহরিয়ারের উপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে গ্রুপ কোম্পানি সেক্রেটারি জনাব মোস্তফা কামাল, এফসিএ, ডিএনসিসির পক্ষে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম, গ্রিন সেভারসের পক্ষে প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি ও কমিউনিটি টাউন ফেডারেশনের পক্ষে সভাপতি নাসরিন আক্তার সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
বৃক্ষরোপণে যারা এগিয়ে আসছে তাদের স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, “বিগত সময়গুলোতে আমরা নিজেদের প্রয়োজনে কেবল বনভূমি ধ্বংসই করেছি। শুধু নিজের লাভের কথা চিন্তা করেছি। কিন্তু একবারও ভাবিনি পরবর্তী প্রজন্ম কিসের মধ্যে বেড়ে উঠবে। আজকে তাই সময় এসেছে নতুন করে ভাবার।” তিনি বিদ্যামান গাছ রেখে নতুন করে জায়গা খুঁজে বের করে বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সংস্থাগুলোকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। তিনি আরোও বলেন, “গাছপালা উজার করে যেভাবে বিল্ডিং বানানো হচ্ছে, আমরা যদি এখন পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগাতে না পারি তাহলে তা অদূর ভবিষ্যতে পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর জন্য আমাদেরকেই দায়ী করবে।” এ সময় তিনি জলবায়ু সংকট মোকাবিলা ও বায়ুদূষণ রোধে বেশি বেশি গাছ লাগানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
পাশাপাশি লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব খাজা শাহরিয়ার বলেন, “আমাদের এই প্রিয় শহর ঢাকা-কে আমরা সবাই চাই আরো সুন্দর করে দেখতে। আমি বিশ্বাস করি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বৃক্ষরোপণের এই বৃহৎ আয়োজন এবং শুধু বৃক্ষ চারা রোপন-ই নয়, চারাগুলোকে পরিপূর্ণভাবে রক্ষনাবেক্ষন ও যত্নসহকারে লালন পালনের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ সামনের দিনগুলোতে ঢাকা শহরের সবুজায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এক মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।” তিনি ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকা শহরের সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিকল্পিত সবুজায়নের লক্ষ্যে ডিএনসিসির এসকল কার্যক্রমগুলোতে সবসময় নিজেদের স্বতঃস্ফূর্ত সম্পৃক্ততা ও পাশে থাকার দৃঢ় আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, অ্যাশট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন, গ্রিন সেভারসের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি ও কমিউনিটি টাউন ফেডারেশনের সভাপতি নাসরিন আক্তার। তাদের বক্তব্যে ঢাকা শহরে পরিকল্পিত সবুজায়নের জন্য পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়টি উঠে আসে। চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বলেন, “আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন অংশগুলোকে ভাগ করার মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে পুরুষদের পাশাপাশি প্রায় ১৭,০০০ নারীদের সাথে কাজ করছি। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও তাদেরকে গঠনমূলক ট্রেনিং এর মাধ্যমে একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির মধ্য দিয়ে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিগুলো পরিচালনা করা এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে যত্ন করে বেড়ে উঠানোর মাধ্যমে ঢাকা শহরকে একটি পরিবেশবান্ধব সবুজ শহরে পরিণত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
সকল প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি-এর চিফ ক্রেডিট রিস্ক অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল হাসান টিপু, সিএফএ; জেনারেল এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস বিভাগ প্রধান মুহাম্মদ হাবিব হায়দার; ব্র্যান্ড মার্কেটিং ও কমিউনিকেশনস বিভাগ প্রধান মোঃ রাজিউদ্দিন; ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মাসুদ আলম ছিদ্দিক; প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান; প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফুল ইসলাম এবং ইউএনডিপির টাউন ম্যানেজার মারুফ হোসেন সহ প্রমুখ।